ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তা’ণ্ডবের বিষয়ে পু’লিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘র’ক্তের হোলি খেলা গণতান্ত্রিক দেশে বরদাস্ত করা হবে না।’ গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের ধ্বং’সযজ্ঞ পরিদ’র্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘ’টনার স’ঙ্গে জড়িতদের ভিডিও ফুটেজ দেখে চি’হ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তাদের প্রত্যেকের বি’রুদ্ধে আ’ইনগত ব্যব’স্থা নেওয়া হবে। আপনারা ভ’য় পাবেন না। প্রত্যেকটি ঘ’টনার জন্য মা’মলা করেন। তাদেরকে আ’ইনের আওতায় আনা হবে। আম’রা আছি আপনাদের পাশে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘ’টনা ৭১ কে মনে করিয়ে দিয়েছে বলে জা’নান আইজিপি বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে সৌরভ নামে এক সাংবাদিককে ধ’রে চার কালেমা পড়িয়ে সে মুসলমান কিনা নি’শ্চিত করা হয়েছে। এ ধ’রনের ক’র্মকাণ্ডের ঘৃণা প্র’কাশের ভাষা নেই। আমি চাই সবার মাঝে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ থেকে ২৮ মা’র্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যা’পক তা’ণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের ক’র্মী রা। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বঙ্গব’ন্ধু স্কয়ার, শহরের বিভিন্ন স্থানে থাকা বঙ্গব’ন্ধুর একাধিক ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, রেলওয়ে স্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, পৌর মেয়রের বাসভবন, পু’লিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, সড়ক ও জনপথ কার্যালয়, গণপূর্ত অফিস, জে’লা মৎস্য অফিস, সার্কিট হাউজ, জে’লা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থা’না ভবনে ধ্বং’সযজ্ঞ চালায়।
হেফাজতের ক’র্মী রা সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মি’লনায়তন, মাতৃসদন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জে’লা ক্রীড়া সংস্থা, জে’লা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের কার্যালয়, জে’লা শিল্পকলা একাডেমি, হিন্দু সম্প্রদা’য়ের ধ’র্মীয় প্রতিষ্ঠানেও হা’মলা চালায়।
হেফাজতের এ ধ্বং’সযজ্ঞ বৃহস্পতিবার পরিদ’র্শন করেন পু’লিশের মহাপরিদর্শক। এদিন দুপুরে ঘ’টনাস্থলগুলো পরিদ’র্শন শেষে বিকেল সাড়ে তিনটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্কিট হাউজে ব্রিফিং করেন বেনজীর আহমেদ।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনারা কাকে কষ্ট দিচ্ছেন? এসিল্যান্ড কার্যালয় পু’ড়িয়েছেন, কার্যালয়ের রেকর্ড রুম পু’ড়িয়েছেন, এতে তো গ্রামের সাধারণ মানুষ কষ্ট করবে। রেলওয়ে স্টেশন পু’ড়িয়েছেন, স্টেশনের ক’ন্ট্রোল প্যানেল ভাঙচুর করে পু’ড়িয়েছেন, এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ মানুষ কষ্ট করছে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বং’স করছেন কেন? আপনাদের ক্ষোভ কি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বি’রুদ্ধে?’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৭৪টি মাদরাসা আছে। এসব মাদরাসায় ১ লাখ ৩ হাজার ছাত্র আছে। তাদের ভরণপোষণ বাবদ বছরে খরচ হয় ৩৬০ কোটি টাকা। এই টাকা বহন করছেন আপনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। আপনারা তাদের খেদমত করছেন। খেদমত করে এখন প্র’তিশোধের শি’কার হচ্ছেন। আমাদেরকে রুহানী আলেম ও পলিটিক্যালি আলেমদের চিনতে হবে।’
পু’লিশ কেন ঘ’টনা নি’য়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি সেটা দেখা হচ্ছে বলে জা’নিয়েছেন আইজিপি। মাইকিং করে পু’লিশের আত্মর’ক্ষার কৌশলকে তিনি অপেশাদার আচরণ বলে মন্তব্য করেন। আইজিপি বলেন, ‘অপেশাদার পু’লিশের দরকার নেই।’
ব্রিফিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, পু’লিশের স্পেশাল শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম, পু’লিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জে’র ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, রেল পু’লিশের ডিআইজি, পু’লিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান প্রমুখ। প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেসক্লাব ও সুর সম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনকে অনুদান প্রদান করেন আইজিপি।